কাগজের শহর
ব্যস্তবহুল এ শহরে, নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যপারগুলোর মাঝে নানান রকম দূষণের কারণে রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহরের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ এবং পানিদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে যে দূষণ নিয়ে হয়তো কেউ ভাবে না, তা হল দৃশ্যদূষণ। এখন শহরের আনাচে কানাচে তাকালেই চোখে পড়ে কাগজের পোস্টার, ব্যানার, এবং ময়লা-আবর্জনা। বিষয়টি ধিরে ধিরে সমস্যায় পরিণত হতে চলেছে। বাসাবাড়ির দেয়াল, সরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়াল, বিদু্যতের খুঁটি, ঐতিহাসিক স্থাপনার দেয়াল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়াল, রাস্তার পাশে ব্যানার, পোস্টার আর দেয়াল লিখনে ছেঁয়ে গেছে চারপাশ। এমনকি গাছও রেহাই পাচ্ছে না। গাছেও পেরেক মেরে লাগানো হচ্ছে “পাত্রি চাই” লেখা প্ল্যাকার্ড। দার্শনিক কোনকিছুই উপভোগ করার আর নেই তেমন। নানান সব বিজ্ঞাপনচিত্র দেখতে দেখতে কেমন যেন এক প্রকার সয়ে গেছে আমাদের চোখ।
এমন অপ্রীতিকর অবস্থার মাঝে বেঁচে থাকা কিছু নগরবাসীর মূল্যবান কথা শুনে আসি...
দেয়াল লিখন ও পোস্টার নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে দৃশ্য দূষণ প্রতিরোধে অভিযান চালিয়েছে এবং কাজ করেছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। পাওয়া গেছে এমন হাজারো পোস্টার ও ব্যানার যার উদ্দেশ্য পূরণ করার পরেও মাসের পর মাস পড়ে থাকে সেগুলো। অথচ দায়িত্ব নিয়ে সেগুলোর ব্যবস্থা করে না কেউই। বেআইনিভাবে স্কুল-কোচিং সেন্টার দেয়ালে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সাঁটিয়ে দেয়া হচ্ছে অনেক পোস্টার। আবার জায়গা না থাকায়, এক পোস্টারের ওপর আরেকটা লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। রাতের বেলায় এসব বেআইনি পোস্টার লাগানোর এক রীতিও চালু হয়েছে। সচেতন হতে হবে সকলকেই। রাজধানীর সৌন্দর্য রক্ষা কেবল সরকারের নয়, এর কাজে নামতে হবে নগরবাসীকেই। কমিটি গঠন করে, পরিকল্পনা করে আর নানান কৌশল কাজে লাগিয়ে গড়তে হবে দূষণমুক্ত একটি সমাজ।